আচমকা তেড়েফুঁড়ে ওঠা জনতার তোপে কোনো এক শাসকের পতন সত্যিকার অর্থে কতটুকু মানে তৈরি করে? গত কয়েক দিনে মিসরের ঘটনাপ্রবাহ অবধারিতভাবেই এ প্রশ্নের সামনে টেনে দাঁড় করায় আমাদের। ক্ষমতা কেমন করে বলতে গেলে আপসে স্বৈরাচারের হাত থেকে সেনার কোলে উঠে পড়তে পারে, তা কয়েক দিন আগে প্রত্যক্ষ করা গেল মিসরে। মোবারক থেকে মিলিটারির হাতে পড়া মিসরের ঘটনাপ্রবাহ এই বার্তা দেয়, সুচিন্তিত সাংগঠনিক প্রস্তুতি, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও প্রশিক্ষণসম্পন্ন নেতৃত্বের অনুপস্থিতিতে হাজারও ন্যায্য কারণে ক্ষুব্ধ-বিক্ষুব্ধ-রুষ্ট বিপুলসংখ্যক মানুষ মহা ভূমিকম্পের মতো গর্জে উঠে দ্রুতই দক্ষযজ্ঞ বাধিয়ে দিতে পারলেও তাদের অর্জন বেহাত হয়ে যেতে পারে ততধিক দ্রুততায়।
মিসরের ঘটনার প্রভাব আরব বিশ্বে কেমন হবে, তা সময় বলে দেবে। তবে এটা স্পষ্ট যে মিসরে দেড় পক্ষব্যাপী পলিটিক্যাল মেলোড্রামার আপাত-অবসান হয়েছে মিলিটারির হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে। গত শুক্রবার মোবারকি শাসন অবসানের ২৪ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে দেশটিতে মিলিটারি শাসনের প্রাথমিক বিকারগুলো স্পষ্ট হতে শুরু করে। অবশ্য এতে আশ্চর্য হওয়ার অবকাশ নেই একেবারেই। মোবারকের গদি ছাড়ার কয়েক দিন আগে থেকে জনতা আর অপজিশন-এলিটদের মিলিটারি-বন্দনা প্রকাশ্য রূপ নেয়। ‘গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের’ পথে সুদৃঢ় ভূমিকা নেওয়ার জন্য মিসরীয় মিলিটারির প্রতি বারাক ওবামার উদাত্ত আহ্বান জানানোর রাজনীতি বোঝা তেমন কঠিন নয়—একসময় আফগানিস্তানে মার্ক্সবাদ ঠেকাতে মৌলবাদ কাজে লেগেছিল; মিসরে মৌলবাদ ঠেকাতে মিলিটারি থেরাপি ভাবা হচ্ছে বলে মনে করা হয়। আচমকা দৃশ্যপটে উদিত এলবারাদি মোবারকের গড়িমসিতে দৃশ্যত ত্যক্ত হয়ে প্রকাশ্যে পাশ্চাত্যের বিরুদ্ধে দু-একটি কড়া উক্তি করলেও মিলিটারিকে তিনিও স্বাগত জানান। এখন অবশ্য মিলিটারি ‘যোগ্য’ প্রতিদান দিচ্ছে। কমান্ডাররা জানাচ্ছেন, সামনের দিনগুলোতে তাঁরা দৃশ্যপটে বারাদিকে চাইছেন না। মিলিটারি সম্ভবত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দেখাতে চাইবে যে বারাদিকে টেবিলে না রেখেও অগ্রসর হওয়া যায়। এতে করে পরিস্থিতির ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণের একটা প্রমাণ দেখানো যাবে। এ ছাড়া মুরব্বিদের সামনে নিজেদের প্রয়োজনীয়তা অধিক কার্যকরভাবে বাজারজাত করা যাবে। আরও লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, বারাদিকে আলোচনার টেবিলে ডাকা না হলেও নিষিদ্ধ মুসলিম ব্রাদারহুডের লোকজনের সঙ্গে কমান্ডারদের বৈঠক ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ব্রাদারহুডের বৈঠকে যাওয়াটাও নব্য-ক্ষমতাধারীদের জন্য প্লাস পয়েন্ট। এর মাধ্যমে প্রভু রাষ্ট্রকে এই মর্মে প্রমাণ করা যাবে যে মিলিটারি ব্রাদারহুডিদের সঙ্গে সমঝে চলায় সক্ষম।
বারাদি নাহয় বাইরের শক্তির সমীকরণের অন্তর্ভুক্ত এক ঘুঁটি। কিন্তু ১৮ দিনের আন্দোলনকালে মিসরীয়দের মধ্যে মিলিটারিপ্রীতির যে নমুনা দেখা গেছে, তার ব্যাখ্যা কী? মনে কি পড়ে না কায়রোর রাস্তায় কামানের গলায় মালা পরিয়ে দিয়ে পলিটিক্যালি অশুদ্ধ নৃত্য ও উল্লাসের ঘটনা? এই তো গত সপ্তাহের ঘটনা। মিলিটারির ক্ষমতা কুক্ষীকরণ-প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার কিছু কণ্ঠ এখনো শোনা যাচ্ছে। তবে এদের জন্য পত্রিকার পাতায় লাইন আর টিভি রিপোর্টিংয়ে সময় বরাদ্দ—দুটোই কমে যাচ্ছে। কেননা বাস্তবতা এই যে, অর্জিত বিজয় সংহত হওয়ার আগেই জনতা রাজপথ থেকে ঘরে ফিরে গেছে। স্বল্পসংখ্যক ভিন্ন স্বরের জন্য মিডিয়া সার্বক্ষণিকভাবে ব্যতিব্যস্ত থাকবে, তা আশা করা যায় না। মোবারক হটানো মিসরীয়দের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেও বলা যায়, আন্দোলনে অর্জিত ‘লাভের গুড়’ এখন ‘পিঁপড়ায়’ খেতে শুরু করেছে।
মিসরের সর্বশেষ পরিস্থিতির আরও একটি লক্ষণীয় দিক হলো, ক্ষমতা হাতে পাওয়া মাত্রই মোবারকবিরোধী রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে ভেদ তৈরিতে সচেষ্ট হয়েছে মিলিটারি। বিশেষ করে সামরিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় কাদের ডাকা হচ্ছে না বা হচ্ছে, তা নিয়ে মোবারকবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া নানা ছোট-বড় গ্রুপের মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহ-অবিশ্বাস দানা বেঁধে উঠতে শুরু করেছে বলে ধারণা দিয়েছে কোনো কোনো মিডিয়া।
আরেকটি ব্যাপার ভুলে গেলে চলবে না, গত ৩০ বছরে পোষমানা কয়টি বিরোধী দল ছাড়া কোনো পলিটিক্যাল পার্টিকে মাথা তুলতে দেননি মোবারক। রাজনীতিহীনতার এই প্রগাঢ় সংকট আন্দোলনে অংশ নেওয়া নানা পক্ষের নানা ভুল তৎপরতায় দগদগে হয়ে ফুটে বেরিয়েছে। ধরা যাক ২০০৮ সালের এপ্রিলে আল মাহাল্লা আল কুবরা শহরে ধর্মঘটে ইচ্ছুক শ্রমিকদের সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে গড়ে ওঠা ফেসবুক-নির্ভর সংগঠন এপ্রিল সিক্স ইয়ুথ মুভমেন্টের কথা।
মোবারকি শাসন অবসানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী এই সংগঠনের ‘ফাউন্ডেশন স্টেইটমেন্ট’-এ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত না থাকার কথা বলা হয়েছে। ভালো কথা। কিন্তু একই লাইনে আরও বলা হচ্ছে, এপ্রিল সিক্স কোনো রাজনৈতিক ধারা বা রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গেও জড়িত নয়। আরও লেখা আছে, কোনো মতাদর্শের পক্ষ নিয়ে সে মতাদর্শকে সঠিক প্রমাণ বা অন্য মতাদর্শকে ভুল প্রমাণের তর্ক-বিতর্কও এই সংগঠনে নিষিদ্ধ। তাহলে কী দাঁড়াল? কলুর বলদের মতো মোবারকবিরোধিতার ঘানি টানাকে কী বলা যায়? দল না থাকুক, কিন্তু কোনো ধারা বা আন্দোলনের পক্ষ-বিপক্ষ না নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় অদল-বদলের যুদ্ধে নামাটাকে রাজনৈতিক নাবালকত্ব ছাড়া আর কী বলা যাবে? এখানেই শেষ নয়। এখন তো চোখের সামনেই দেখা যাচ্ছে ক্ষমতা জনতার হাতে নেই। কিন্তু এপ্রিল সিক্স বুধবার আরও একবার ‘সম্মানিত সামরিক বাহিনীর প্রতি পূর্ণ আস্থা থাকার’ কথা জানিয়ে দিয়েছে। এই অপরিপক্বতা ভয়াবহ।
হয়তো সত্য, এপ্রিল সিক্স মিসরীয় রাজনীতিক-সংস্কৃতির পূর্ণ চিত্র দেয় না। কিন্তু মোবারকের বিদায়ের আগে মিলিটারিকে মহান মুক্তিদাতা হিসেবে ধরে নেওয়া কিংবা মোবারকের বিদায় অন্তে বলতে গেলে তেমন কোনো প্রতিবাদ না করেই সুবোধভাবে ঘরে ফিরে যাওয়ার মধ্যে মিসরীয় সমাজে রাজনৈতিক সংস্কৃতির দীনতার কথাই জানান দেয়। মোবারকবিরোধী আন্দোলনের প্রভাব আরব বিশ্বে হতে পারে সুদূরপ্রসারী। কিন্তু মোবারক নামের অচলায়তন হটাতে গিয়ে মিসরীয়রা মিলিটারি শাসনের গভীর খাদে পড়ে গেল কি না, তা সময় বলে দেবে।
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১১
মিসরের ঘটনার প্রভাব আরব বিশ্বে কেমন হবে, তা সময় বলে দেবে। তবে এটা স্পষ্ট যে মিসরে দেড় পক্ষব্যাপী পলিটিক্যাল মেলোড্রামার আপাত-অবসান হয়েছে মিলিটারির হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে। গত শুক্রবার মোবারকি শাসন অবসানের ২৪ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে দেশটিতে মিলিটারি শাসনের প্রাথমিক বিকারগুলো স্পষ্ট হতে শুরু করে। অবশ্য এতে আশ্চর্য হওয়ার অবকাশ নেই একেবারেই। মোবারকের গদি ছাড়ার কয়েক দিন আগে থেকে জনতা আর অপজিশন-এলিটদের মিলিটারি-বন্দনা প্রকাশ্য রূপ নেয়। ‘গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের’ পথে সুদৃঢ় ভূমিকা নেওয়ার জন্য মিসরীয় মিলিটারির প্রতি বারাক ওবামার উদাত্ত আহ্বান জানানোর রাজনীতি বোঝা তেমন কঠিন নয়—একসময় আফগানিস্তানে মার্ক্সবাদ ঠেকাতে মৌলবাদ কাজে লেগেছিল; মিসরে মৌলবাদ ঠেকাতে মিলিটারি থেরাপি ভাবা হচ্ছে বলে মনে করা হয়। আচমকা দৃশ্যপটে উদিত এলবারাদি মোবারকের গড়িমসিতে দৃশ্যত ত্যক্ত হয়ে প্রকাশ্যে পাশ্চাত্যের বিরুদ্ধে দু-একটি কড়া উক্তি করলেও মিলিটারিকে তিনিও স্বাগত জানান। এখন অবশ্য মিলিটারি ‘যোগ্য’ প্রতিদান দিচ্ছে। কমান্ডাররা জানাচ্ছেন, সামনের দিনগুলোতে তাঁরা দৃশ্যপটে বারাদিকে চাইছেন না। মিলিটারি সম্ভবত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দেখাতে চাইবে যে বারাদিকে টেবিলে না রেখেও অগ্রসর হওয়া যায়। এতে করে পরিস্থিতির ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণের একটা প্রমাণ দেখানো যাবে। এ ছাড়া মুরব্বিদের সামনে নিজেদের প্রয়োজনীয়তা অধিক কার্যকরভাবে বাজারজাত করা যাবে। আরও লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, বারাদিকে আলোচনার টেবিলে ডাকা না হলেও নিষিদ্ধ মুসলিম ব্রাদারহুডের লোকজনের সঙ্গে কমান্ডারদের বৈঠক ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ব্রাদারহুডের বৈঠকে যাওয়াটাও নব্য-ক্ষমতাধারীদের জন্য প্লাস পয়েন্ট। এর মাধ্যমে প্রভু রাষ্ট্রকে এই মর্মে প্রমাণ করা যাবে যে মিলিটারি ব্রাদারহুডিদের সঙ্গে সমঝে চলায় সক্ষম।
বারাদি নাহয় বাইরের শক্তির সমীকরণের অন্তর্ভুক্ত এক ঘুঁটি। কিন্তু ১৮ দিনের আন্দোলনকালে মিসরীয়দের মধ্যে মিলিটারিপ্রীতির যে নমুনা দেখা গেছে, তার ব্যাখ্যা কী? মনে কি পড়ে না কায়রোর রাস্তায় কামানের গলায় মালা পরিয়ে দিয়ে পলিটিক্যালি অশুদ্ধ নৃত্য ও উল্লাসের ঘটনা? এই তো গত সপ্তাহের ঘটনা। মিলিটারির ক্ষমতা কুক্ষীকরণ-প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার কিছু কণ্ঠ এখনো শোনা যাচ্ছে। তবে এদের জন্য পত্রিকার পাতায় লাইন আর টিভি রিপোর্টিংয়ে সময় বরাদ্দ—দুটোই কমে যাচ্ছে। কেননা বাস্তবতা এই যে, অর্জিত বিজয় সংহত হওয়ার আগেই জনতা রাজপথ থেকে ঘরে ফিরে গেছে। স্বল্পসংখ্যক ভিন্ন স্বরের জন্য মিডিয়া সার্বক্ষণিকভাবে ব্যতিব্যস্ত থাকবে, তা আশা করা যায় না। মোবারক হটানো মিসরীয়দের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেও বলা যায়, আন্দোলনে অর্জিত ‘লাভের গুড়’ এখন ‘পিঁপড়ায়’ খেতে শুরু করেছে।
মিসরের সর্বশেষ পরিস্থিতির আরও একটি লক্ষণীয় দিক হলো, ক্ষমতা হাতে পাওয়া মাত্রই মোবারকবিরোধী রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে ভেদ তৈরিতে সচেষ্ট হয়েছে মিলিটারি। বিশেষ করে সামরিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় কাদের ডাকা হচ্ছে না বা হচ্ছে, তা নিয়ে মোবারকবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া নানা ছোট-বড় গ্রুপের মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহ-অবিশ্বাস দানা বেঁধে উঠতে শুরু করেছে বলে ধারণা দিয়েছে কোনো কোনো মিডিয়া।
আরেকটি ব্যাপার ভুলে গেলে চলবে না, গত ৩০ বছরে পোষমানা কয়টি বিরোধী দল ছাড়া কোনো পলিটিক্যাল পার্টিকে মাথা তুলতে দেননি মোবারক। রাজনীতিহীনতার এই প্রগাঢ় সংকট আন্দোলনে অংশ নেওয়া নানা পক্ষের নানা ভুল তৎপরতায় দগদগে হয়ে ফুটে বেরিয়েছে। ধরা যাক ২০০৮ সালের এপ্রিলে আল মাহাল্লা আল কুবরা শহরে ধর্মঘটে ইচ্ছুক শ্রমিকদের সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে গড়ে ওঠা ফেসবুক-নির্ভর সংগঠন এপ্রিল সিক্স ইয়ুথ মুভমেন্টের কথা।
মোবারকি শাসন অবসানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী এই সংগঠনের ‘ফাউন্ডেশন স্টেইটমেন্ট’-এ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত না থাকার কথা বলা হয়েছে। ভালো কথা। কিন্তু একই লাইনে আরও বলা হচ্ছে, এপ্রিল সিক্স কোনো রাজনৈতিক ধারা বা রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গেও জড়িত নয়। আরও লেখা আছে, কোনো মতাদর্শের পক্ষ নিয়ে সে মতাদর্শকে সঠিক প্রমাণ বা অন্য মতাদর্শকে ভুল প্রমাণের তর্ক-বিতর্কও এই সংগঠনে নিষিদ্ধ। তাহলে কী দাঁড়াল? কলুর বলদের মতো মোবারকবিরোধিতার ঘানি টানাকে কী বলা যায়? দল না থাকুক, কিন্তু কোনো ধারা বা আন্দোলনের পক্ষ-বিপক্ষ না নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় অদল-বদলের যুদ্ধে নামাটাকে রাজনৈতিক নাবালকত্ব ছাড়া আর কী বলা যাবে? এখানেই শেষ নয়। এখন তো চোখের সামনেই দেখা যাচ্ছে ক্ষমতা জনতার হাতে নেই। কিন্তু এপ্রিল সিক্স বুধবার আরও একবার ‘সম্মানিত সামরিক বাহিনীর প্রতি পূর্ণ আস্থা থাকার’ কথা জানিয়ে দিয়েছে। এই অপরিপক্বতা ভয়াবহ।
হয়তো সত্য, এপ্রিল সিক্স মিসরীয় রাজনীতিক-সংস্কৃতির পূর্ণ চিত্র দেয় না। কিন্তু মোবারকের বিদায়ের আগে মিলিটারিকে মহান মুক্তিদাতা হিসেবে ধরে নেওয়া কিংবা মোবারকের বিদায় অন্তে বলতে গেলে তেমন কোনো প্রতিবাদ না করেই সুবোধভাবে ঘরে ফিরে যাওয়ার মধ্যে মিসরীয় সমাজে রাজনৈতিক সংস্কৃতির দীনতার কথাই জানান দেয়। মোবারকবিরোধী আন্দোলনের প্রভাব আরব বিশ্বে হতে পারে সুদূরপ্রসারী। কিন্তু মোবারক নামের অচলায়তন হটাতে গিয়ে মিসরীয়রা মিলিটারি শাসনের গভীর খাদে পড়ে গেল কি না, তা সময় বলে দেবে।
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১১
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন